শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৩ বছরে ৩টি পিলার করেই বন্ধ সেতু নির্মান কাজ ভোগান্তিতে ৪ ইউনিয়বাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: শুক্রবার, মার্চ ২২, ২০২৪

৩ বছরে ৩টি পিলার করেই বন্ধ সেতু নির্মান কাজ ভোগান্তিতে ৪ ইউনিয়বাসী
এম.এম হায়দার আলী
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার রইচপুর নামক স্থানে খালের উপর নির্মাণাধীন সেতুটির কাজ গত তিন বছরেও শেষ করা সম্ভব হয়নি। ফলে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের কমপক্ষে ৫০ হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াতের ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বাধ্য হয়েই বিকল্প কাঠের তৈরি সেতুর উপর দিয়ে জীবনের চরম  ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে সাধারণ মানুষ। দ্রুত সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা। জানা যায়, সাতক্ষীরা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে রইচপুর খালের উপর সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২১ সালে। সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেয়া হয় ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সল্যুশন ডিজাইনকে। কার্যাদেশ অনুযায়ী সেতু নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা ২০২২ সালের নভেম্বরে। কিন্তু ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কেবল মাত্র  ৩ টি পিলার ঢালাই ছাড়া কোনো অগ্রগতি হয়নি। এলজিইডি’র প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, বারবার তাগাদা দেয়ার পরও সেতুর কাজ শেষ করানো যাচ্ছে না সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে দিয়ে। সর্বশেষ ঠিকাদারকে ছয় মাসের সময় নির্ধারণ করে চিঠি দিয়েছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্টরা। ছয় মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য বলা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, শহরের প্রবেশমুখ ইটাগাছা-ঘোনা সড়কের রইচপুর খালের ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে সেতুটি। সদর উপজেলার ঘোনা, শিবপুর, আগড়দাড়ী ও আলিপুর ইউনিয়নের অন্তত ৫০ হাজার মানুষের যাতায়াতের মাধ্যম হলো রইচপুর সেতু। বিগত ২০২১ সালে পুরনো সেতু ভেঙে সেখানে শুরু হয় নতুন সেতু নির্মাণের কাজ। কিন্তু গত তিন বছরেও সেতু নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আর সেই থেকে  বিকল্প পথ হিসেবে যে সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। তা দিয়ে কোনো রকম সাইকেল বা মোটরসাইকেল পার ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় অ্যাম্বুলেন্স বা ফায়ার সার্ভিসের সেবাও মিলছে না ওই এলাকার বিপদগ্রস্থ  জনসাধারণের । সাতক্ষীরা পৌরসভার কাউন্সিল মো. জাহাঙ্গীর কবির কালু জানান, পৌরসভার শেষ সীমানা হলো রইচপুর। তাছাড়া ব্যস্ততম সড়ক এটি। আশপাশে তিন-চারটি ইউনিয়নের মানুষ চলাচল করে সড়ক দিয়ে। এসব ইউনিয়নের উৎপাদিত কৃষিপণ্য সবজি বা বিভিন্ন প্রকার মাছ জেলা শহরে নিয়ে যাওয়া হয় রইচপুর সেতু পার হয়ে। অথচ দীর্ঘ তিন বছরেও সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ হলো না। স্থানীয় সংসদ সদস্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও কাজের অগ্রগতি পাওয়া যায়নি। সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জানান,গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের বাসিন্দারা যাতায়াত করে। কিন্তু তিন বছরেও মাত্র ৫০ মিটার দৈর্ঘ্য একটি সেতু নির্মাণ শেষ হলো না,এটি আসলে মানতে কষ্ট হয়। এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জান বলেন,এখন পর্যন্ত ৩০-৩৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ছয় মাসের মধ্যে সেতুটি নির্মাণ শেষ করার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে গত সপ্তাহে। এর ব্যত্যয় ঘটলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ  ব্যবস্থা নেয়া হবে। সর্বোপরি, জনগুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টি দেখার জন্য স্থানীয় সচেতন মহল সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন  কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
0 Comments